দুই মাস ২৭ দিন পর আজ মঙ্গলবার খুলে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর মিরপুর—১০ মেট্রোরেল স্টেশন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিক্ষোভকারীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় কাজীপাড়া ও এই স্টেশনটি। এর আগে খুলে দেওয়া হয় ২০ সেপ্টেম্বর কাজীপাড়া স্টেশন।
ওই সংঘর্ষ ঘিরে ৩৭ দিন বন্ধ থাকার পর গত ২৫ আগস্ট পুনরায় মেট্রোরেল চলাচল শুরু হয়। তখন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর—১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন বন্ধ ছিল। পরে ২০ সেপ্টেম্বর কাজীপাড়া স্টেশনটি চালু হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে গত ১৮ জুলাই ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে রাজধানীর মিরপুর—১০ নম্বর গোলচত্বরে থাকা পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এরপর ওইদিন বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন ১৯ জুলাই শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে মেট্রোরেল বন্ধ ছিল। এদিন মেট্রোরেলের কাজীপাড়া ও মিরপুর—১০ নম্বর স্টেশনে হামলা করা হয়।
আজ সোমবার রাজধানীর উত্তরায় মেট্রোরেল পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) কার্যালয়ে এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, আগামীকাল উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মিরপুর—১০ স্টেশন ফের চালুর আনুষ্ঠানিকতা করবেন। সে সময় তিনি এই স্টেশনে মেরামতে কত খরচ হয়েছে, সেই তথ্যও জানাবেন।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রউফ বলেন, ১৯ জুলাই দুটি স্টেশন ভাঙচুর করা হয়। গত ১৪ আগস্ট এই দুটি স্টেশন নিয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর উপদেষ্টা মহোদয় দুটি স্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি তাড়াতাড়ি কীভাবে চালু করা যায়, সে ব্যবস্থা নিতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, এই স্টেশন ঠিক করতে কোনো ঠিকাদার বা বিদেশি কাউকে লাগেনি। ডিএমটিসিএল নিজেই দুটি স্টেশন ঠিক করেছে।
এর আগে এই দুটি স্টেশন ঠিক করতে প্রায় ৩০০ কোটি টাকা ও ১ বছর সময় লাগবে এমন বলা হয়ছিল। কেন এমন বলা হয়েছিল এই প্রশ্নে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, যিনি বা যারা এগুলো বলছিলেন, তাদের থেকে এই বিষয়ে জানতে হবে।
এত তাড়াতাড়ি কীভাবে স্টেশন চালু করা সম্ভব হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, লোকাল যেসব রিসোর্স ছিল সেগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। এ ছাড়া মেট্রোরেলের কয়েকটি স্টেশন থেকে কিছু জিনিস নেওয়া হয়েছে। এই দুটি স্টেশন ঠিক করতে নতুন করে সরকার থেকে টাকা নেবে না ডিএমটিসিএল।
এ দিকে আগামী শুক্রবার থেকে মেট্রোরেলের হেডওয়ে (দুই ট্রেনের মধ্যবর্তী সময়) ১২ মিনিটের জায়গায় ১০ মিনিট করা হবে। এতে ৬০ টির পরিবর্তে ৭২টি ট্রেন চলাচল করবে।
এ বিষয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে ২৫ আগস্ট থেকে ট্রেন চালু হওয়ার পর ৩১ আগস্ট পর্যন্ত আয় হয়েছে ৫ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে আয় হয়েছে ৩৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আর দিনে গড়ে আয় হয়েছে ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। অক্টোবরে প্রথম ১৩ দিনে আয় হয়েছে ১১ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর দিনে গড় আয় ৮৬ লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, অক্টোবরে চার দিনের ছুটি থাকায় রাজস্ব আয় একটু কম হয়েছে। ২০২৫ সালের পর এটির লাভ—ক্ষতি নিয়ে তথ্য বলা যাবে। তখন পুরোপুরি কমলাপুর পর্যন্ত চালু হবে।
সূত্র: আজকের পত্রিকা