ডিজিটাল বাণিজ্য নীতিমালা- এলসি ছাড়াই আমদানি-রপ্তানির সুযোগ বাড়বে

ডিজিটাল বাণিজ্যদেশে প্রথমবারের মতো ক্রস বর্ডার (আন্তসীমান্ত) ডিজিটাল বাণিজ্য নীতিমালা হচ্ছে।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য ও সেবা আমদানি-রপ্তানি করার পাশাপাশি ক্ষেত্রবিশেষে সেগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্যই করা হচ্ছে এ নীতিমালা।ডিজিটাল বাণিজ্য

আমদানি-রপ্তানির বিপরীতে আর্থিক লেনদেন নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ করাও এ নীতিমালা তৈরির উদ্দেশ্য।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নীতিমালাটির একটি খসড়া আজ সোমবার জনমতের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এ নীতিমালা হলে ঋণপত্র (এলসি) খোলা ছাড়াই দেশে বসে যেকোনো ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ডিজিটাল বাণিজ্যের মাধ্যমে পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পণ্য ও সেবা আমদানি-রপ্তানি করা যাবে।

আমাজন, আলী বাবা, বেস্টবাইসহ বিশ্বজুড়ে থাকা সব ধরনের বিদেশি ডিজিটাল বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অনলাইনে খুচরা ও বাল্ক আকারে পণ্য রপ্তানি করতে পারবে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, কোভিড-১৯–এর পর থেকে ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্র বাড়ছে এবং ডিজিটাল বাণিজ্য এখন আর নিজ দেশের সীমান্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই।

সম্ভাবনার পাশাপাশি নতুন নতুন চ্যালেঞ্জও দেখা দিচ্ছে এ খাতে। বাংলাদেশ একটি দ্রুতবর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ।

আন্তসীমান্ত বাণিজ্যের মাধ্যমে এ দেশের হাজার হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা সরাসরি যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবে।

তবে আন্তসীমান্ত ডিজিটাল বাণিজ্যের মাধ্যমে নকল বা ভেজাল পণ্য এবং কল্পিত বা ধারণাগত পণ্য কেনাবেচা করা যাবে না।

অনলাইন লটারি, জুয়া, বেটিং, গেমিং ইত্যাদি আয়োজন করা যাবে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া কোনো গিফট কার্ড, গিফট ভাউচার বা অর্থের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে, এমন কোনো কার্ড বা ডিজিটাল নম্বর বা মাধ্যম কেনাবেচা করতে পারবে না।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, ডিজিটাল বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশে অনলাইনে খুচরা পণ্য বা সেবা বিক্রির ক্ষেত্রে বিদেশি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাংলাদেশে ডিবিআইডি নিতে হবে।

আর দেশের ভেতরে পণ্য সরবরাহের উদ্দেশ্যে পণ্যের বাল্ক আমদানি করা যাবে।

ডিজিটাল বাণিজ্যের মাধ্যমে আমদানি করে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে ব্যবহার করলে ইপিজেডের মতো সুবিধা পাওয়া যাবে।

তবে আমদানি করা পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে নির্ধারিত কর ও ভ্যাট দিতে হবে।

বিদেশি ডিজিটাল বাণিজ্য কোম্পানি দেশের অভ্যন্তরে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে।

খসড়ায় বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে বিজনেস-টু-কনজ্যুমার (বিটুসি) এবং কনজ্যুমার-টু-কনজ্যুমার (সিটুসি) সীমান্ত বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ছে।

বিশ্ববাণিজ্যের পরবর্তী পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে বাংলাদেশকেও এ ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে।

২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানির পরিমাণ ৭৮ দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

একই সময়ে রপ্তানির পরিমাণ ৬৩ দশমিক শূন্য ৬ বিলিয়ন ডলার।

ডিজিটাল বাণিজ্য সম্প্রসারণে দেশীয় লজিস্টিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিবহন ও সরবরাহ কোম্পানিগুলোর সংযোগ ও সমন্বয় করা হবে।

পণ্য ও সেবা সরবরাহের ক্ষেত্রে সেন্ট্রাল লজিস্টিকস ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি) চালু করা হবে। এই প্ল্যাটফর্ম সব লেনদেন পদ্ধতির সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।

সুত্র – প্রথম আলো

মতামত দিন