কুমিল্লায় কাটা হাত নিয়ে হেঁটে চলা সেই আনিছ গ্রেপ্তার

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় এক হাতে চাপাতি, অন্য হাতে এক ব্যক্তির কাটা হাত নিয়ে হেঁটে চলা সেই আনিছ মিয়া (২২) ও তাঁর সহযোগী শাকিল মিয়াকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার ভোরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদরের তালতলী এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সোমবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দাউদকান্দি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস।

দাউদকান্দি মডেল থানা—পুলিশের একটি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানা—পুলিশের সহযোগিতায় তাদের গ্রেপ্তার করে। কুপিয়ে হত্যা করে হাত কেটে নেওয়া মহিউদ্দিনের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের ওলানপাড়া গ্রামে। ৭ সেপ্টেম্বর দিনমজুর মহিউদ্দিনকে হত্যা করে হাত কেটে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে আনিছ মিয়া ও তাঁর সহযোগী শাকিল মিয়া পলাতক ছিলেন। গত শনিবার ভোরে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে তাঁদের শনাক্ত করে পুলিশ।
এসআই আবদুল কুদ্দুস জানান, ৭ সেপ্টেম্বর দিনদুপুরে গৌরীপুর ইউনিয়নের ওলানপাড়া গ্রামের মসজিদ—সংলগ্ন সড়কে মহিউদ্দিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যা করার একপর্যায়ে মহিউদ্দিনের ডান হাতের কনুই পর্যন্ত দেশি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কেটে বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিচ্ছিন্ন হাতের ওই অংশ এক হাতে এবং অন্য হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হেঁটে যাওয়া আসামি আনিছের ১১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা গেছে, আনিছ এক হাতে চাপাতি, অন্য হাতে মহিউদ্দিনের কাটা হাতের অংশ ঘোরাতে ঘোরাতে হেঁটে চলে যাচ্ছেন।
এসআই আবদুল কুদ্দুস, পরে হাতের বিচ্ছিন্ন অংশটি ঢাকা—চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার জিংলাতলী সেতুর পূর্ব পাশে ফেলে মুঠোফোন বন্ধ করে পালিয়ে যান। আনিছ প্রথমে গ্রামের বাড়ি চান্দিনার শালিকায় ওঠেন। গ্রামবাসী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হত্যার ভিডিও চিত্র দেখে আনিছকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেন। এর পর থেকে আনিছ বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়ান।

হত্যার ঘটনায় মহিউদ্দিনের মা মনোয়ারা বেগম আনিছকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখ করে ৮ সেপ্টেম্বর দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি আনিছ মিয়ার বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার শালিখা গ্রামে। মামলার ২ নম্বর আসামি শাকিল মিয়ার বাড়ি দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর গ্রামে। মামলার আরেক আসামি গৌরীপুর গ্রামের বাবুকে (২০) হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পর গ্রেপ্তার করা হয়।

আবদুল কুদ্দুস বলেন, রোববার কুমিল্লার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনিছ মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তবে শাকিল মিয়া হত্যার কথা স্বীকার না করায় আদালতে তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।

মতামত দিন